বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে (শোন এরেস্ট) আগামী ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজ এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন পেশ করেন।
বর্তমানে অন্য মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা যাদের ট্র্যাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয়া হয়েছে তারা হলেন- সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, গোলাম দস্তগীর গাজী, শাহজাহান খান, দীপু মনি, ফারুক খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, জুনায়েদ আহমেদ পলক, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তৌফিক এলাহি, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্র সচিব জাহাঙ্গীর আলম।
এছাড়া আলাদা আরেক আবেদনে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানসহ ছয়জনকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ট্র্যাইব্যুনালে হাজিরেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাদেরকে ২০ নভেম্বর হাজির করতে নির্দেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। অপর একটি আবেদনে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমানসহ ১৭ জন পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এখানে বাকি আসামিদের নাম প্রকাশ করেনি প্রসিকিউশন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারা দেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ৭৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা বরাবরও অভিযোগ জমা পড়ছে।
গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম আজ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আজ তিনটি আবেদন পেশ করেছি। শুনানি নিয়ে ট্রাইব্যুনাল আদেশ দেয়।