ঐতিহাসিক এবং নান্দনিক চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ এর সম্মুখস্থ মাঠটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা ও সবুজ উদ্যান করার দাবীতে গত ২ অক্টোবর “সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন” নগরীর পুরাতন সার্কিট হাউসের সম্মুখে শতাধিক নগরবাসীর উপস্থিতিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
সার্কিট হাউজ সংলগ্ন উন্মুক্ত প্রান্তরটি বৃটিশ আমলে নির্মিত সার্কিট হাউজের ডিজাইনের একটা অংশ। এই উন্মুক্ত প্রান্তর চট্টগ্রাম মহানগরের টেকসই অবকাঠামোর এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এটি উন্মুক্ত হিসাবে জনগণের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক চর্চা ও বিকাশের অন্যতম অংশ হিসাবে সমাদৃত ছিল। নগরবাসীর শারিরীক ও মানসিক সুস্থতার সহায়ক অনুষঙ্গ হিসাবেও এই মাঠ কাজ করেছে। এরপর এই জায়গা বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহৃত হতে শুরু করে ও নগরবাসীর স্বস্তিটুকু কেড়ে নেওয়া হয়। অতি সম্প্রতি বানিজ্যিকভাবে নির্মিত শিশুপার্ক তুলে দেয়া হয়। এখন নগরবাসীর পক্ষে “সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন” দাবি রাখছে এই জায়গাটা পূর্বের ন্যায় উন্মুক্ত সবুজ প্রান্তর হিসাবে সংরক্ষণের, যা’ আজকের মানববন্ধনের উদ্দেশ্য।
সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের আয়োজনে আজকের মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে ও সংহতি জানিয়ে সার্কিট হাউজ সংলগ্ন এই মাঠকে উন্মুক্ত সবুজ প্রান্তর হিসাবে সংরক্ষণের দাবিসহ বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের বিশিষ্ট নাগরিক, শিক্ষাবিদ, পরিবেশবিদ, নগর পরিকল্পনাবিদ, সিনিয়র বিজ্ঞজন ও সিভিল সোসাইটির পক্ষ থেকে বিশিষ্ট মুক্তিযুদ্ধ গবেষক ও সমাজ সংগঠক ডা: মাহফুজুর রহমান, প্রফেসর ডা. ইমরান বিন ইউনুস, মুক্তিযোদ্ধা ও নদী গবেষক প্রফেসর ড. ইদ্রিস আলী, বাপা’র চেয়ারম্যান এম এ হোসেন রাজু, দৈনিক বাংলা’র ব্যুরো চীফ ডেইজি মওদুদ, ধরিত্রী রক্ষায় আমরা-ধরার সদস্য সচিব ও প্রাণ-প্রকৃতি সম্পাদক শারুদ নিজাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা অধিকার রক্ষা পরিষদ এর সদস্য-সচিব জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, চট্টগ্রাম বাগান পরিবার এর প্রতিনিধি এ আর টি রাহী, প্রবাসী বদরুল হক খান, সংগঠক নাজিমুদ্দিন চৌধুরী এনেল, সরওয়ার হোসেন আমীন, হাসিনা খানম, আঁখি সুলতানা, মো. আশরাফ ও এনামুল হক প্রমুখ।
মানববন্ধনে উপস্থিত বক্তারা আরো বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে নগরে উন্মুক্ত জায়গার বিশেষ অভাব অথচ নাগরিক জীবনে এটি অতি আবশ্যক। চট্টগ্রাম মহানগরের সব পরিকল্পনা, মহাপরিকল্পনায় উন্মুক্ত স্থান গুলো সংরক্ষণের কথা বলা আছে যা টেকসই উন্নয়নের আবশ্যিক শর্ত। উন্মুক্ত স্থান যেমন খেলার মাঠ, সবুজ চত্বর, জলাশয়, পাহাড় এগুলো তাপ ও বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ করে সাথে জলাবদ্ধতাও সামাল দেয়। একই সাথে নগরবাসীর শারিরীক ও মানসিক সুস্থতার জন্য এই উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ অতি জরুরি।
মানবন্ধন কর্মসূচির উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন এর মুখপাত্র রিতু পারভী, অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের সংগঠক জাহেদুল আলম এবং সভাপতিত্ব করেন সংগঠক ডা. মনজুরুল করিম বিপ্লব।