‘সরকার আবার পুরনো খেলায় মেতে উঠেছে’ : মির্জা ফখরুল

গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নিউজ মার্কেট এলাকায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলায় দায়েরের ঘটনা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, “নিউ মার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদেন মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় হেলমেটধারী প্রকৃত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার না করে বিএনপি নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার ও প্রায় ২৪ জন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতার নাম উল্লেখ করে প্রায় ১২শ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিএনপি মনে করে এই অবৈধ সরকার পুনরায় পুরোনো খেলায় মেতে উঠেছে। টানা দুই দিনে সংঘর্ষ বন্ধ করতে না পারায় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা ও উদাসীনতাকে যখন জনগন দায়ী করছে সেই সময়ে সম্পূর্ণ রাজণৈতিক উদ্দেশ্যে বিএনপির নিরাপরাধ নেতা মকবুল হোসেনকে গ্রেফতার ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের আড়াল করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।”
মির্জা আলমগীর বলেন, “গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে যে সত্যটি উদঘাটিত হয়েছে যে, হামলাকারীরা ছাত্র লীগের সন্ত্রাসী। ভিডিও ফুটেজ থেকে অন্ততঃ তিন জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে যারা ঢাকা কলেজের ছাত্র লীগের সক্রিয় কর্মী। গণমাধ্যমের রিপোর্টে এটাও স্পষ্ট যে, প্রধানত: চাঁদাবাজীর কারণে এবং নিজেদেরে প্রভাব বিস্তারের ছাত্র লীগের বিভিন্ন গ্রুপের ভয়াবহ সন্ত্রাসীরা এই ঘটনার জন্য দায়ী। শুধু এই ঘটনাই নয়, নিউ মার্কেটসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা গুলোতে দীর্ঘদিন ধরেই শাসক গোষ্ঠীর ছাত্র ছায়ায় ব্যাপক চাঁদাবাজী ও সন্ত্রাসী কার্য্কলাপ সংঘটিত হচ্ছে। ছাত্র লীগ, যুব লীগ, পুলিশের সহায়তায় সেখানে অপরাধ জগত গড়ে তুলেছে।” “গণমাধ্যমের রিপোর্টিংয়ে বেরিয়ে এসেছে যে, এই পুরো এলাকাটা ইনক্লুডিং টিচার ট্রেনিং সেন্টার, হোষ্টেল সব গুলোই ছাত্র লীগের নিয়ন্ত্রণে। এমনকি ছাত্র লীগের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের বরাদ্ধকৃত যে রুম সেই রুমও তারা সাবলেট করে ভাড়া দেয়। এটাও রিপোর্টে এসেছে। মির্জা আলমগীর বলেন, “সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যের ঊধর্বগতির কারণে সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থতার বিরুদ্ধে যখন জনগন বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে তখন জনগনের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য সরকার উদ্দেশ্যমূলক ভাবেই এই সংষর্ষের ঘটনা ঘটিয়ে বিএনপিকে জড়াচ্ছে। সরকার পূর্বের মতই মামলার বেড়া জালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বন্দি করার চক্রান্ত করছে। ‘মামলা, গ্রেফতার, গুম, খুন, হত্যা এই সরকারের প্রধান অস্ত্র যা দিয়ে বিএনপিকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চেষ্টা করছে। নিউ মার্কেটের সন্ত্রাসী সংঘর্ষ, পুলিশের ভূমিকা এবং পরবর্তিতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার ও মামলা দায়ের আবারো প্রমাণ করলো আওয়ামী লীগ সরকার ভয় দেখিয়ে, নির্যাতন করে, হত্যা করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চায়।”
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নিউ মার্কেটের ঘটনায় নাহিদ ও মুরসালিনের নিহত হওয়ায় শোক প্রকাশ করা হয় এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদেরে সমবেদনা জানানো হয়। একই সঙ্গে ওই ঘটনায় আহত সাংবাদিকসহ অন্যান্য ব্যক্তিদের আশু সুস্থতা কামনা করা হয়েছে। “নিউ মার্কেটের সংঘর্ষের ঘটনা প্রমাণ করেছে দেশে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটা নাজুক। পুলিশের উপস্থিতির মধ্যেই ভয়াবহ হামলা, পাল্টা হামলা, মারাত্মক অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হেলমেট পরিহিত সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে মানুষ মারছে অথচ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা জনগনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।”

0Shares

নিউজ খুজুন