নিজস্ব প্রতিবেদক : পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ আয়োজিত মহা ধর্ম সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, শ্রীকৃষ্ণ মানুষের জীবন ধারণের জন্য কর্ম, জ্ঞান ও ভক্তি এ তিনটি উপায় অনুসরণ করতে বলে গিয়েছেন। কর্মফলের কথা চিন্তা না করে নিজের কাজ করতে, জ্ঞানের চর্চার মাধ্যমে নিজেকে ও ¯্রষ্টাকে জানার মাধ্যেমে জীবন যাপন করা এবং ¯্রষ্টা এবং সৃষ্টির প্রেমে আকূল হয়ে মানবতার সেবার মাধ্যেই জীবনের সার্থকতা নিহীত। আমরা তার বাণী থেকে প্রতিদিন অনুপ্রেরণা গ্রহণ করি। সুতরাং শ্রীকৃষ্ণ মানবতা ও অনন্ত অনুপ্রেরণার উৎস। আপনারা যদি শ্রীকৃষ্ণের উপদেশ মেনে চলেন আপনাদের কেউ দাবিয়ে রাখতে পারবেনা।
এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, শ্রীকৃষ্ণ জন্ম নিয়েছিলেন অত্যাচারী রাজা কংসের কারাগারে। শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করে পৃথিবীকে শুনিয়ে গেছে শেকল ভাঙার কাহিনী। মানুষের জন্য দিয়ে গেছেন মানব প্রেমের অভিনশ^র বাণী। সেটি এমন এক সময় যখন দুষ্টু লোকেরা ন্যায় নীতি ও সত্যকে প্রায় নষ্ট করে ফেলেছিল। ঠিক তখনি সৃষ্টের পালন আর দুষ্টের দমনের জন্য পৃথিবীতে এসেছিলেন। একসময় হয়ে উঠলেন ন্যায়ের প্রতিমূর্তি। যখন মহাভারতে ন্যায় এবং অন্যায়ের মধ্যে কুরুক্ষেত্রে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। তখন শ্রীকৃষ্ণ ন্যায়কে রক্ষার জন্য ন্যায়ের পক্ষের যোদ্ধা হয়ে দাড়িয়েছিলেন। আমরাও ন্যায়ের পক্ষের যোদ্ধা। আমরাও এদেশে সংর্কীনতাবাদ থেকে দূরে থাকতে চাই। ১৪০৮ খ্রিস্টাব্দে চন্ডীদাশ গেয়ে উঠেন “সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই”। তারই পথ অনুসরণ করে আমাদের কবি, লেখক সাহিত্যিক সাধু এখনো সেই পথে আমাদের পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আর তারই পথ অনুসরণ করে প্রধানমন্ত্রীও সেই পথ অনুসরণ করেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছিলেন। এবং সে জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশে^ প্রসংসিত হয়েছেন। শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে পারলে আমাদের দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। সর্বোপরি বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়ীক দেশে রুপান্তর করতে সক্ষম হবো। আমি ভারতে গিয়ে বলেছি আমাদের দেশে দুষ্টু লোখ আছে। আপনার দেশে যখন কিছু অসুবিধা হয় তখন সেই দুষ্টু চক্র সেটা নিয়ে দেশে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। আমাদের অর্থসামাজিক উন্নয়নের কারনে প্রায় ২৮ লক্ষ লোক ভারতে ভ্রমন করতে যায় এবং কয়েক লক্ষ লোক আমাদের দেশে কাজ করে। আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক এত সুন্দর। সুতরাং আমরা কেউ উস্কানীমূলক কাজে লিপ্ত হবো না। একবছর আগে পূজার সময় কুমিল্লায় দেবতার পাশে কোরআন শরীফ রেখে এবং ছবি তুলে আপলোড করার ফলে ভাইরাল হয়। ফলে কিছু মোল্লা গোষ্ঠি সেখানে আক্রমন করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে সেখানে পুলিশ গুলি করে। সে সময় আমাদের তথ্য মতে সেখানে ছয় জন লোক মারা যায়। চার জন মুসলিম আর দুই জন হিন্দু। এসময় মন্ত্রী বলেন, আমরা চাইনা দেশের একটা লোকও মারা যাক। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম প্রচার করেছে সেখানে অনেক নারী নির্যাতিত হয়েছে। অথচ সেখানে একটা নারীও ধর্ষিত হয়নি। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর খুনীরা যেমন দেশে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে আমাদের জাতির পিতাকে হত্যা করেছিলো ঠিক তেমনি এখনো দেশেকে অস্থিতিশীল করতে তারা নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সুতরাং শেখ হাসিনাকে আমাদের ঠিকিয়ে রাখতে হবে। যদি এটি সম্ভব না হয় তবে সকলের জন্য বিপদ। সে বিপদ যাতে না হয় আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। আমরা যদি শেখ হাসিনাকে সুরক্ষিত রাখতে পারি তবেই বাংলাদেশের রানৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে করতে পারবো।
মহা ধর্ম সম্মেলনে কেন্দ্রীয় শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন কমিটির সভাপতি সুকুমার চৌধুরীর সভাপতিত্বে উদ্বোধক হিসেবে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে বাঁশখালী উপজেলার সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, এস কে সিকদার, চন্দন তালুকদার, দুলাল চন্দ্র দে, গৌরাঙ্গ চন্দ্র দে, দুলাল চন্দ্র দে, শংকর সেন বক্তৃতা করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন এসময় ধর্মীয় সংগঠনের অসংখ্য প্রতিনিধি এবং প্রেস ও ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও হাজারো ভক্তপ্রাণ নর-নারী ।