লোহাগাড়ার আমিরাবাদের বড় মাওলানার ঘোড়দৌঁড় মেলা অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক লোহাগাড়া থেকে মোঃ ইউসুফঃ উপজেলার প্রাচীনতম নিদর্শন আমিরাবাদ ইউনিয়নস্থ সুখছড়ি এলাকায় বিশাল আয়তন জুড়ে দু’দিন ব্যাপী অনুষ্ঠিত হযরত বড় মাওলানা মুফাজ্জুলুর রহমান (রহঃ)-এর ১২৮ তম ঘোড়দৌঁড় মেলা ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারী অনুষ্ঠিত হয়েছে। মুসলিম সম্প্রাদায়কে তৎকালীন সময়ে অপসংষ্কৃতির গ্রাস থেকে রক্ষা করার জন্য ১৮৯৬ সালে হযরত বড় মাওলানা (রহঃ)-এর একান্ত ভক্ত ও অনুরাগী জনৈক নুরুদ্দীন ফকির এ’ঘোড়দৌঁড় মেলার আয়োজন করেন। প্রতি বছর মাঘ মাসের শেষ সপ্তাহে এ’ঘোড়দৌঁড় মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলার একদিকে চলে রকমারি পণ্যের বেচাকেনা এবং অন্যদিকে চলে আলেম-ওলামাদের দ্বীনি বয়ান। বাদ আছর অনুষ্ঠিত হয় প্রাচীন ঐতিহ্য ঘোড়দৌঁড় প্রতিযোগিতা। আনন্দ-উপভোগ করতে সমাগম ঘটে বিভিন্ন বয়সের অসংখ্য দর্শকের। মিষ্টান্ন পণ্য ও শিশুদের খেলনা সামগ্রীর বেচাকেনার ধুমধামে মেলাচত্বর থাকে দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখরিত।
অপ্রতিরোধ্য জ্ঞান তাপস,সাধক, গবেষক ও ইসলামিক দর্শনের আলোকিত বিশ্লেষক হযরত মাওলানা মুফাজ্জুলুর রহমান বড় মাওলানা হিসেবে পরিচিতি ছিলেন। উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যেভাগে অর্থাৎ আনুমাণিক ১৮১৪ ঈসয়ী সনে বর্তমান লোহাগাড়া উপজেলার সুখছড়ি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম সৈয়দ মুতিউল্লাহ মিঞাজী। তিনি সাতকানিয়া থানার মির্জাখীল গ্রাম থেকে এখানে এসে বসবাস শুরু করেন। তিনি ভারতের কলকাতা আলীয়া মাদরাসা থেকে কৃতিত্বের সহিত উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। দেশ-বিদেশে তাঁর সুনাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তাঁর রচিত অসংখ্য গ্রন্থ রয়েছে। তিনি পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে জীবন আলোকিত করার জন্য উপদেশ দিতেন। তাঁর ভক্ত ও অনুসারীদের মধ্যে ৩ জন ভক্তকে ফকির উপধি দিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন যথাক্রমে নুরুদ্দীন ফকির,আবদুল করিম ফকির ও মনিরুজ্জামান ফকির। হযরত বড় মাওলানা শুধু মানব সমাজের বড় মাওলানা নন বরং তিনি জীন্নাতদের কাছে ও সম্মানের পাত্র ছিলেন। তাঁরই পরামর্শমতে এলাকার মুসলিম সম্প্রাদায়কে অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নুরুদ্দীন ফকির এ’ঘোড়াদৌঁড় মেলার গোড়া পত্তন করেন।
১৯১৪ সালে মহান জ্ঞান সাধক হযরত বড় মাওলানা ইন্তেকাল করেন। কিন্ত এ’ঘোড়দৌঁড় মেলা বড় মাওলানার অম্লান স্মৃতি ও প্রাচীনতম এলাকার এক অপূর্ব নিদর্শন।

0Shares

নিউজ খুজুন