রাষ্ট্র পর্যায়ে দুর্নীতি দেশদ্রোহিতার শামিল : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, সম্পদের সুরক্ষা ও যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ। রাষ্ট্র পর্যায়ে দুর্নীতি দেশদ্রোহিতার শামিল, এতে দেশের সম্পদ অপচয় হয় এবং পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবেশ ধ্বংস হলে মানুষও সুরক্ষিত থাকে না। দেশের নদীগুলো সুরক্ষিত রাখতে পারলে নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় থাকবে, মানুষ সুপেয় পানি পাবে এবং নানা রোগ থেকে রক্ষা পাবে।

উপদেষ্টা আজ ঢাকার গুলশানে একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত “বাংলাদেশে PFAS (Perfluoroalkyl and Polyfluoroalkyl Sulostances) দূষণ ও জনস্বাস্থ্য” শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আমরা নীতিমালা ও অধ্যাদেশ প্রণয়নের মাধ্যমে কাজ করে যেতে চাই। এজন্য আপনাদের সুচিন্তিত মতামত আহ্বান করছি, যাতে সকলে মিলে এসব কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া যায়। তিনি বলেন, “আমাদের মন্ত্রণালয় কেবল শিশু ও নারীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে না; বরং মানুষের সুরক্ষা, নিরাপত্তা এবং অসহায় জনগণের কল্যাণে, যেন তারা নিরাপদ জীবনযাপন করতে পারে—সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।”

উপদেষ্টা আরো বলেন, আমরা একটি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে আছি। সবাই মিলে যদি এখনই এগিয়ে না আসি, তাহলে ভবিষ্যতে বড় বিপর্যয় মোকাবিলা করা কঠিন হবে। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নীতি নির্ধারণে বিশ্বাসী। নদী গবেষণায় দীর্ঘদিনের কাজগুলো কেবল বইয়ের পাতায় আবদ্ধ থাকলে চলবে না। প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি প্রতিবেদনগুলো বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। বারবার নতুন করে গবেষণা করে সময় নষ্ট করা অনুচিত। নিম্ন আয়ের মানুষ, যারা এই দূষিত পানির সংস্পর্শে আসে, তারা ক্যানসার, লিভার সমস্যা, থাইরয়েড রোগ এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা হ্রাসের মতো গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকিতে থাকে। বেশিরভাগ PFAS দূষণ তৈরি পোশাক কারখানাসমূহ থেকে ঘটে। সহজ ও সাশ্রয়ী পদক্ষেপের মাধ্যমে এই দূষণ রোধ করা সম্ভব।

উল্লেখ্য, PFAS বা ‘ফরএভার কেমিক্যাল’ হলো একটি বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য, যা চামড়া ও টেক্সটাইল খাত থেকে নির্গত হয়ে পানি ও মাটি দূষিত করে। বিশেষ করে ঢাকা, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ অঞ্চলের নদীগুলোর পানি PFAS দ্বারা মারাত্মকভাবে দূষিত হয়েছে।

জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বর্জ্য ও রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক রাজিনারা বেগম, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের বেসরকারি উপদেষ্টা এস এম সিদ্দিকী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হাসান জীবন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।

0Shares

নিউজ খুজুন