রাষ্ট্র ক্ষমতার সুযোগ দিলে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে গুম-খুন নির্যাতনের বিচার করা : তারেক রহমান

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের জনগণ ভোটের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতার সুযোগ দিলে বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুম-খুন এবং জুলাই বিপ্লবে সকল নির্যাতন ও হত্যার বিচার অবশ্যই করবে।

তিনি বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, বিএনপিকে যদি জনগণ আগামী দিনে দেশ পরিচালনার সুযোগ দেয় তাহলে রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি অবশ্যই আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে গুম-খুন নির্যাতনের বিচার করা।  অনেকে নির্যাতিত হয়েছেন এবং জুলাই বিপ্লবে যাদেরকে বিভিন্নভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেই হত্যার বিচার অবশ্যই আমরা করবো।

‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে আজ বিকেলে রাজধানী ঢাকার গুলশানে লেকশোর হোটেলে বিগত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে গুম, খুনের শিকার পরিবার ও চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ এবং তাদের জন্য ‘ঈদ উপহার বিতরণ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে ভার্চূয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কেবল বিএনপি নয়, আগামী দিন যে রাজনৈতিক দলই দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পাবেন, তাদের বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে অবশ্যই একটি কর্মসূচি থাকতে হবে তা হলো- যে মানুষগুলো এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, যে পরিবারগুলো তাদের সদস্যদের হারিয়েছে অথবা নির্যাতিত হয়েছেন তাদের পাশে থাকা। তাদের ওপর অন্যায়কারীর বিচার করা।   আগামী দিনে আমরা যদি অন্যায়ের সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার না করতে পারি হয়তোবা দেশের আবারও অন্যায় সংগঠিত হতে পারে। ক্ষতিগ্রস্থদের ন্যায় বিচার দেওয়ার মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে প্রতিষ্ঠিত করা জরুরি- কেউ ন্যায়ের বিরুদ্ধে গেলে তাকে দেশের আইন অনুযায়ী শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। তা না হলে একের পর এক অন্যায় সংঘটিত হতেই থাকবে। দেশ আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

শহীদ পরিবার সদস্য ও নির্যাতিত ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আপনারা দয়া করে হতাশ হবেন না, আশা রাখবেন। আমরা এতটুকু যখন আসতে পেরেছি, সামনের পথটুকু পাড়ি দিতে পারব। আমরা যদি সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি, সবাই যদি অন্যায় বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকি অবশ্যই আমরা এই অন্যায়ের বিচার করতে সক্ষম হবো। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, দেশের গণতন্ত্রের পক্ষে সব রাজনৈতিক দল এই বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করবে না। গণতন্ত্র, গণতন্ত্র রক্ষা, মানুষের বাকস্বাধীনতা এবং নির্যাযিত ব্যক্তিবর্গের ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিত করা- এই বিষয়গুলোর প্রতি গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

তাদের আত্মত্যাগের কারণেই আজকে মুক্ত বাংলাদেশ। জনগণ মুক্তভাবে শ্বাস নিতে পারছেন। এই দেশের রাজনৈতিক অধিকারের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সংক্ষেপে বললে মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, যেটি বিগত স্বৈরাচার সরকার ছিনিয়ে নিয়েছিল। বাংলাদেশের জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তারা যে আকাঙ্ক্ষা-প্রত্যাশা নিয়ে দেশ ও জনগণের জন্য যুদ্ধ করেছেন, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন তাদের সেই প্রত্যাশা যেন আমরা পুরণ করতে পারি, পরিবার সদস্যদের কাছে সেই দোয়া চেয়েছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। যারা গুমের শিকার তাদের পরিবারের সঙ্গে আমি একাত্ম পোষণ করছি। যারা গুম ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন আমি ও আমার প্রয়াত ভাই আপনাদেরই অংশ।

আয়নাঘরের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, কিছুদিন আগে হুমাম কাদের চৌধুরী দেখা করতে এসেছিল। তিনি বলেছিলেন, ভাইয়া আপনাকে যে ঘরে রাখা হয়েছিল আমাকেও সেই একই ঘরে রাখা হয়েছিল। এখানে অনেকেই আছি যারা আয়নাঘর থেকে ঘুরে এসেছি, অনেকে নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আবার অনেক পরিবার তাদের স্বজনদের এখনো ফেরত পায়নি।

0Shares

নিউজ খুজুন