মৎস্য চাষে প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারিত হলে দেশে মাছের সংকট থাকবে না : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

বিজ্ঞানীদেরকে জাতির মূল্যবান সম্পদ উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন,  মৎস চাষে প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে সম্প্রসারিত হলে দেশে মাছের সংকট থাকবে না। বিজ্ঞানীদের এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে, যা সাধারণ মানুষের বোধগম্য হবে এবং উপকারিতা জনগণ সরাসরি বুঝতে পারবে। তিনি বলেন, তারা যেন তাদের মেধা দিয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করতে পারে, গবেষণায় আরো মনোনিবেশ করতে পারে—সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা নিশ্চিত করা হবে।

উপদেষ্টা আজ ময়মনসিংহে বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিএফআরআই) ‘বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি (২০২৪-২৫) পর্যালোচনা ও গবেষণা পরিকল্পনা (২০২৫-২৬) প্রণয়ন’ শীর্ষক আঞ্চলিক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা আরো বলেন, ছোটোমাছকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বিএফআরআইকে সচেষ্ট থাকতে হবে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্য বিভাগ, বিএফআরআই এবং মৎস্য অধিদপ্তরকে অভিন্ন লক্ষ্যে আন্তঃসমন্বয় করে কাজ করতে হবে। তবেই বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদের গুণগত পরিবর্তন সম্ভব। কৃষি কার্যক্রমে ব্যবহৃত কীটনাশক হাওর এলাকার মাছের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কীটনাশক নিয়ন্ত্রণে বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিগুলোর কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে হাওর অঞ্চলে কীটনাশক ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে কমবে। ফলে জলজ প্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।

বাংলাদেশে বিলুপ্তপ্রায় ও হুমকির মুখে থাকা মাছ শনাক্তে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) প্রজাতিগুলোকে লাল (বিপন্ন), হলুদ (ঝুঁকিপূর্ণ) ও সাধারণ (নিরাপদ) শ্রেণিতে ভাগ করেছে। এ উদ্যোগের অংশ হিসেবে মাছের সংকট নিরসনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায়  বিএফআরআই কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সফল হলে তা দেশের মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণে একটি বড় মাইলফলক হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার বলেন, গবেষণাকে মাঠ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএফআরআইয়ের  মধ্যে সমন্বয় জরুরি।

বিএফআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. অনুরাধা ভদ্রের সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় পরিচালক  নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, বিএফআরআইয়ের বিজ্ঞানীরা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা এবং মৎস্য খামারিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় স্বাদু পানি কেন্দ্রের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. হারুন উর রশিদ গবেষণা পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন।

এসময় উপদেষ্টা বিএফআরআইয়ের গবেষণা মাঠের ঘারুয়া, রাণী, মহাশোল, দেশী স্বঁরপুটি, ভাগনা, গুলশা, পাবদা, টেংরা, বাটা, বিএফআরআই তেলাপিয়া, বটমক্লিন সিস্টেম (পাবদা ও মাগুর), গুড়া চিংড়ি, কুচিয়া, কার্প রেণু হ্যাচারি এবং মুক্তা ল্যাব পরিদর্শন করেন।

0Shares

নিউজ খুজুন