ভিয়েতনামে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে গতকাল যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫ পালন করা হয়েছে।

জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণের মাধ্যমে দিবসটির প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে, প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ ও প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এছাড়া, মহান একুশের ভাষা শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

পরে, দূতাবাসের কনফারেন্স রুমে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। এতে হ্যানয়ে বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকবৃন্দ, ইউনেস্কো অফিসের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি, ভিয়েতনামের সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন বিষয়ক প্রতিনিধি এবং ভিয়েতনামে অবস্থিত প্রবাসি বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমান এবং হ্যানয়ে ইউনেস্কো অফিসের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি মিকি নযাবা। রাষ্ট্রদূত তাঁর বক্তব্যের শুরুতে ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদগণকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘Make Languages count for Sustainable Development’ উল্লেখ করে বলেন, জাতিসংঘ উন্নয়ন অভিষ্ট লক্ষ্য-৪ অন্তর্ভুক্তিমূলক, গুণগত এবং জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের বিকল্প নেই। অথচ আজ বিশ্বে অনেক শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষার  গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত। তিনি বিশ্বের সকল শিশুর জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ।

আলোচনা পর্ব শেষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মানে হ্যানায় বেশ কয়েকটি দূতাবাস থেকে তাদের মাতৃভাষায় প্রাপ্ত ভিডিও পারফর্মেন্স প্রদর্শন করা হয়। ভিয়েতনামে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইটো নাওকি বাংলা ভাষায় সংগীত পরিবেশন করেন। রাশিয়া দুতাবাসের কূটনীতিক আন্দ্রে বোরোডেনকো এবং ভিয়েতনামে বসবাসরত প্রবাসি বাংলাদেশি নাগরিক জুনায়েদ সিদ্দিকি রাশিয়ান এবং বাংলা ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। এছাড়া, মায়ের ভাষায় অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য আয়োজন করা হয় ‘দেয়াল লিখন উৎসব’। এতে বিভিন্ন ভাষাভাষীদের লেখনীতে বিভিন্ন ভাষার মিলনমেলায় পরিণত হয় দূতাবাস প্রাঙ্গণ।

0Shares

নিউজ খুজুন