উন্নয়ন বাজেটের ৪০ ভাগ কৃষিখাতে বরাদ্দের দাবিতে পটিয়ায় সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টের সমাবেশ ও স্মারকলিপি পেশ।
চট্টগ্রামে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট পটিয়া শাখার উদ্যোগে অর্থমন্ত্রী বরাবর আসন্ন জাতীয় বাজেটে উন্নয়ন খাতের ৪০ ভাগ কৃষিতে বরাদ্দের দাবিতে পটিয়া ইউএনও এর মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ কর্মসূচি ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
পটিয়া থানার মোড়ে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড স.ম ইউনুসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ চট্টগ্রাম জেলা শাখার ইনচার্জ এবং কৃষক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আল কাদেরী জয়, কৃষক নেতা সেলিম উদ্দিন, নাসু মিঞা, আহমদ নূর, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, চট্টগ্রাম নগর শাখার সভাপতি মিরাজ উদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ পরিচালনা করেন কৃষক ফ্রন্ট নেতা মুবিনুল হক সাব্বির।
সমাবেশে বক্তারা বলেন,” এদেশে কৃষক কিনতে ঠকে,বেচতেও ঠকে।দেশের শতকরা ৮৫ ভাগ লোক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষির উপর নির্ভরশীল। এ দেশকে উন্নত করতে হলে কৃষি এবং কৃষকের উন্নয়ন ঘটাতে হবে সবার আগে। সার-বীজ, সেচ-কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বাড়ছে কিন্তু ফসলের লাভজনক দাম কৃষক কখনোই পায় না।
ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতে চলতি বোরো মৌসুমে ২ কোটি ২২ লাখ মে. টন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে অন্তত ৫০ লাখ টন ধান উৎপাদন খরচের সাথে ৪০ শতাংশ মুনাফা দিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে সরকারের কেনা উচিত। অথচ সরকার মাত্র ৫ লাখ টন ধান এবং ১২ লাখ টন চাল কেনার ঘোষণা দিয়েছে। এতে কৃষক নয় বরং মুনাফালোভী চাতাল মালিকরাই লাভবান হবে।এদেশে খেতমজুরদের সারা বছরের কাজের নিশ্চয়তা নেই। মুনাফালোভী বাজার সিন্ডিকেট এর দৌরাত্ম্যের ফলে কৃষক-খেতমজুরসহ সকল শ্রমজীবী মানুষ দিশেহারা। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে গ্রাম-শহরের শ্রমজীবীদের নাভিশ্বাস উঠেছে। কৃষক-খেতমজুরদের ছেলে- মেয়েদের মানসম্মত শিক্ষা, চিকিৎসা নাগালের বাইরে। ফলে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপনে বাধ্য হচ্ছে। আমাদের কৃষির উপর ভরসা অনেক বেশি অথচ বাজেটে বরাদ্দ কম। জিডিপিতে কৃষিরখাতে অর্ধেকেরও কম বরাদ্দ হয়। এক যুগে এই বরাদ্দ কমে নেমে এসেছে অর্ধেকে। অথচ দেশের খাদ্য নিরাপত্তাসহ সার্বিক উন্নয়নে কৃষিখাতে সরকারের মনোযোগ ও বরাদ্দ বৃদ্ধির কেনো বিকল্প নেই।”
সমাবেশে কৃষি-কৃষক এবং দেশ বাঁচাতে অর্থমন্ত্রীর মাধ্যমে সরকারের নিকট আসন্ন বাজেটে উন্নয়ন বরাদ্দের শতকরা ৪০ ভাগ কৃষিখাতে বরাদ্দের দাবি জানানো হয়। সমাবেশ পরবর্তী মিছিল সহকারে ইউএনও এর মাধ্যমে স্মারকলিপি পেশ করা হয়, এবং জাতীয় বাজেটের উন্নয়ন বরাদ্দের ৪০ ভাগ কৃষিখাতে বরাদ্দসহ প্রতিটি ইউনিয়নে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র চালু করা,ধানসহ ফসলের ন্যায্যমূল্য নিশ্চয়তা, বিএডিসিকে সচল করে সার, বীজ, কীটনাশক ন্যায্যমূল্যে ও সময়মত সরবরাহ কর এবং আর্মিরেটে গ্রামীণ রেশনিং ও খেতমজুরদের সারা বছর কাজের নিশ্চয়তার দাবিসহ পটিয়ার
পানচাষি ও সবজি চাষিদের জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়।
পাঠক সংখ্যাঃ ৮০
0Shares