চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন বলেছেন, বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হলে প্রত্যেক দপ্তরে তথ্য সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে হবে। গোপনীয়তার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে তথ্য প্রদানের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তিনি তার বক্তব্যে জুলাই বিপ্লবের অর্জন ধরে রাখতে সবাইকে একযোগে দেশ গঠনে মনোনিবেশ করার আহবান জানান। তিনি অংশগ্রহণকারী সকল দপ্তর এর উদ্দ্যেশ্যে বলেন, মেলার এই আয়োজন তখনই সফল হবে যখন কোন তথ্যসেবা প্রাপ্তি তথ্য পাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত না হন। তিনি মেলার এই শিক্ষাকে ধরে রাখতে সবাইকে তথ্য প্রদানে ইতিবাচক মনোভাব পোষনের আহŸান জানান। তিনি ১৬ জানুয়ারি তথ্য মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন।
তথ্যের অধিকার, সুশাসনের হাতিয়ার, তথ্যই শক্তি, দুর্নীতি থেকে মুক্তি’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গনে জেলা প্রশাসন এবং সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-টিআইবি, চট্টগ্রাম এর যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী তথ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এলএ) একেএম গোলাম মোর্শেদ খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত তথ্য মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ পুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মো. তারেক আহমেদ, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এর পরিচালক প্রফেসর মো: ফজল কাদের চৌধুরী, দুদক এর উপ-পরিচালক নাজমুসচ্ছাদায়াত, সনাক চট্টগ্রামের সাবেক সভাপতি ড. আনোয়ারা আলম এবং টিআইবি’র সিভিক এনগেজমেন্ট বিভাগের কোঅর্ডিনেটর কাজী শফিকুর রহমান।
‘দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তথ্য অধিকার’ শীর্ষক সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথিবৃন্দ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলেনের মাধ্যমে যে অর্জন তা যেন নষ্ট না হয় সেজন্য সকল দপ্তরকে তথ্য প্রদানে অনেক বেশী আন্তরিক হতে হবে। তারা বলেন, স্বপ্রণোদিত হয়ে জনগণকে তথ্য জানাতে সরকারি ও বেসরকারি সকল দপ্তরকে এগিয়ে আসতে হবে। বক্তারা আরো বলেন, এক সময় তথ্য দেয়াটা ছিল অপরাধ। আর এখন না দেয়াটা হলো অপরাধ। তারা বলেন, দেশে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। সেই পরিবর্তনে ছাত্র তরুণদের সহায়তা করতে হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে দুর্নীতির মুলোৎপাটন। তারা দুর্নীতি প্রতিরোধে সকল দপ্তরে অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করার আহবান জানান।
দুইদিন দিনব্যাপী তথ্যমেলার সমাপনী দিনের অনুষ্ঠান মালায় ‘বৈষম্য ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মানে নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ১০টি সরকারি দপ্তরের জেলা প্রধানরা অংশগ্রহণ করেন। তাদের সাথে বিভিন্ন পর্যায়ের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ মতবিনিময় করেন, তৎমধ্যে ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মককর্তা, উন্নয়নকর্মী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশাজীবি প্রতিনিধিবৃন্দ।
মেলার সমাপনী দিনে তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে ‘বৈষম্যহীন দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তরুণ ভাবন’া শীর্ষক সংলাপে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের ২১ টি সংগঠন এর প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। ২১০ জন তরুণ প্রতিনিধির মধ্যে ২০ জন তরুণ প্রতিনিধি সংলাপে বক্তব্য প্রদান করেন এবং তাদের মতামত তুলে ধরেন। এছাড়াও মেলার সমাপনী দিবসে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে কুইজ প্রতেেিযাগীতা, সেবাদাতা ও সেবাগ্রহীতা প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বিষয়ক নাগরিক সংলাপ, দুর্নীতি ও সুশাসন বিষয়ক প্রীতি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। দুইদিন ব্যাপী মেলায় চট্টগ্রাম মহানগরের ৩১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার কয়েক হাজার লোক অংশগ্রহণ করেন। মেলায় অংশগ্রহণকারী ৪১টি স্টল থেকে সেবা প্রত্যাশীরা প্রায় চার হাজার এর অধিক আবেদনের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।