‘বিএনপি নির্বাচন নয়, ক্ষমতার নিশ্চয়তা চায়’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহ্মুদ। আজ রাজধানীতে সিরডাপ মিলনায়তনে জাতীয় সংসদ সদস্যদের স্বাস্থ্য বিষয়ক ফোরাম ‘বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফোরাম ফর হেলথ এন্ড ওয়েলবিয়িং’ এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে আয়োজিত ‘২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ এবং অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালীকরণ’ জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে মন্ত্রী সাংবাদিকদের একথা বলেন। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাক্তার আ ফ ম রুহুল হক এবং সাবেক মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন।
ড. হাছান মাহ্মুদ বলেন, ‘বিএনপি’র কাছে একমাত্র সমাধান হচ্ছে এমন একটি কমিশন, এমন একটি ব্যবস্থা, যেটি আগে থেকেই বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর নিশ্চয়তা দেবে। বিএনপিকে আসলে নির্বাচন ভীতি পেয়ে বসেছে। এজন্য নির্বাচন নিয়ে সবসময় নেতিবাচক কথা বলে আসছে। তারা চান, কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বলবে যে তাদেরকেই ক্ষমতায় বসাবে, অন্যথায় তারা মানবে বলে মনে হয় না।’ সুশীল সমাজসহ সবার সাথে নির্বাচন কমিশনের আলোচনা অত্যন্ত ইতিবাচক এবং সেখানে কে যেতে পারে বা না পারে সেটা তার ব্যক্তিগত ইচ্ছা কিন্তু কমিশনের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই, সাধুবাদ জানাই, বলেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই দেশে সবার অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অত্যন্ত সুন্দর নির্বাচন হোক, বিএনপিও সেখানে অংশগ্রহণ করুক এবং সমস্ত দল অংশ নিক। কিন্তু কেউ অংশ নেবে কি নেবে না সেটি তাদের নিজস্ব দলের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।’ ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিএনপি’র নেতৃত্বে যেভাবে অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, মির্জা ফখরুল সাহেবসহ বিএনপির নেতারা যেখানে হুকুমের আসামি, সেটি এখনো বিচারাধীন। এগুলোর বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হওয়া প্রয়োজন। কারণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য এভাবে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা সমসাময়িক বিশ্বে কোথাও ঘটে নাই। কোনো কোনো দেশে জাতিগত সংঘাত হচ্ছে কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জীবন্ত মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, ঘুমন্ত ট্রাক ড্রাইভারকে হত্যা, স্কুলগামী শিশুর ওপর বোমা নিক্ষেপ করে হত্যা -এ ধরনের ঘটনা পৃথিবীর কোথাও গত দশ-বিশ বছরে ঘটে নাই, যেটি বিএনপি ঘটিয়েছে। তাদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হওয়া উচিত বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।’
আয়োজক ফোরামের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবে মিল্লাত এমপি জানান, পার্লামেন্টারি ফোরামের পক্ষ থেকে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য মিলে প্রধানমন্ত্রী বরাবর ই-সিগারেটসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের অনুরোধপত্র, আইন সংশোধনের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর ১৫২ জন সংসদ সদস্যের স্বাক্ষরিত চিঠি এবং তামাকপণ্যের কর ও মূল্যবৃদ্ধির জন্য অর্থমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
এর আগে অনুষ্ঠানে তামাক আইন সংশোধনের নানা দিক উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডাঃ নিজাম উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতি ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা, আর তামাকখাতের রাজস্ব আয় ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা।