প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের মাঝে সংযুক্তি, ব্যবসা, বাণিজ্য এবং দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগের বিষয়ে মনোনিবেশ করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে কাজ করার জন্য পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গুরুত্বে বিশ্বাস করে চলেছি। একই সঙ্গে এই বর্ষপূর্তি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি এবং সামনের পথচলা সম্পর্কে চিন্তা করার সুযোগ এনে দিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী গতিশীল অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে কাজ করতে নিজেদের পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করার জন্যও এটি একটি উপলক্ষ। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মূল বিষয় এখন জনগণের মধ্যে সংযুক্তি, বাণিজ্য, ব্যবসা ও যোগাযোগে মনোনিবেশ করা, যা উভয় পক্ষের জন্য পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলে তিনি জানান।
প্রধানমন্ত্রী মৈত্রী দিবস বা ফ্রেন্ডশিপ ডে-তে সোমবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রচারিত দুই মিনিটের ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০২১ সালের ২৬ থেকে ২৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় সফরকালে আমরা ঢাকা ও নয়াদিল্লির পাশাপাশি নির্ধারিত ১৮টি শহরে যৌথ উদযাপনের বিষয়ে একমত হয়েছি এবং ৬ ডিসেম্বরকে ‘মৈত্রী দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছি। বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে আজ (৬ ডিসেম্বর) ঢাকা ও নয়াদিল্লিতে এবং বেলজিয়াম, কানাডা, মিসর, ইন্দোনেশিয়া, রাশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, জাপান, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুইজারল্যান্ড, থাইল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের ১৮টি দেশে বন্ধুত্বের দিন পালন করছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের যাত্রায় এটি একটি মাইলফলক। ভারত ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।’ শেখ হাসিনা বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে দুই দেশ এবং দেশের জনগোষ্ঠী একত্রে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও ধারণাকে বাস্তবতায় পরিণত করে চলবে। ‘আমাদের অংশীদারিত্ব চুক্তি, সমঝোতা স্মারক, দ্বিপাক্ষিক চুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় যা আমাদের কাজের সম্পর্কের আনুষ্ঠানিক কাঠামো প্রদান করে। আজ আমাদের বিশাল অংশীদারিত্ব পরিপক্ব হয়েছে, গতিশীল, ব্যাপক এবং কৌশলগত আকার নিয়েছে এবং সার্বভৌমত্ব, সমতা, বিশ্বাস এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক ইতিহাস, সংস্কৃতি, ভাষা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র এবং অন্যান্য অগণিত অভিন্নতার যৌথ মূল্যবোধে পরিগণিত।’
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স (আইসিডব্লিউএ) ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ভারতের স্বীকৃতি প্রদান করার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার নয়াদিল্লিতে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা, নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান এবং আইসিডব্লিউএ মহাপরিচালক বিজয় ঠাকুর সিং অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।