নড়াইল জেলা বিএনপি’র দ্বিবার্ষিক এ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জনগণের কল্যাণের লক্ষ্যে এখন থেকেই সার্বক্ষণিক মাঠে থাকার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন,‘ভোটের মাঠে বিএনপি’র প্রতি জন-আস্থা থাকলেও জনগণের কল্যাণে এখন থেকেই সকলকে মাঠে নামতে হবে। দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে এবং ৩১ দফা বাস্তবায়নের জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের এখনই প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি মানসিকতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।
‘বিএনপি জনগণের রায় নিয়ে আগামীতে ক্ষমতায় এলে ৩১ দফা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে, যা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হিসেবে চলবে। আমরা ধাপে ধাপে এটি আরও উন্নত করবো। যেদিন বাংলাদেশের মাটিতে জনগণের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সেদিনই বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের প্রকৃত বিজয় অর্জিত হবে।’ ‘জনগণের আস্থা অর্জনে আমরা ৩১ দফা বাস্তবায়নের মাধ্যমে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের দীর্ঘদিনের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দেশকে পুনর্গঠন করতে চাই।’
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন,‘আওয়ামী লীগ গত ১৬ বছর ধরে দেশের জনগণের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের ৩১ দফা রূপরেখা বাস্তবায়নের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগের দমন-পীড়নের প্রকৃত প্রতিশোধ নেওয়া হবে।’
জনগণের সমর্থন পেলে আগামী নির্বাচনে বিএনপির জয়ের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল- এ কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে ৩১ দফা বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবে, যা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হিসেবে চলবে। আমরা ধাপে ধাপে এটি আরও উন্নত করবো। যেদিন বাংলাদেশের মাটিতে জনগণের জন্য ৩১ দফা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। সেদিনই বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রকৃত বিজয় অর্জিত হবে।
পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনরা শাসনামলে দেশের বিভিন্ন সেক্টরের অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, খুনি আওয়ামী লীগ সরকার দেশের অর্থনীতি, শিক্ষাব্যবস্থা ,উন্নয়ন ও গণতন্ত্র ধ্বংস করে গেছে। নির্বাচনের নামে দেশের জনগণের সঙ্গে তামাশা ও প্রহসন করেছে। বিরোধী দলের প্রতি দমন, পীড়ন নীতি চালানো ও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীদের গুম, খুন করা হয়েছে। জোরপূর্বক ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা মানুষের কথা বলার অধিকারকে হরণ করে অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একচ্ছত্র অপশাসন কায়েম করেছিল। ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার, খুনি ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পতন ঘটেছে। বাংলার মাটি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে শেখ হাসিনা।
তারেক রহমান বরেন, এই মুহুর্তে ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার ফিরে পেতে দেশের সাধারণ জনগণ বিএনপির দিকেই তাকিয়ে আছে। তাই মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার ফিরিয়ে আনতে এবং রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের কাজে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
দেশ ও জনগণের কল্যাণে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার অবদান তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, জনগণের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা, শিশুদের শিক্ষিত করা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, শিল্পায়ন সম্প্রসারণ ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে গিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও বর্তমান চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নানান বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। তবুও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথে দলীয় নেত্রী থেমে থাকেননি। সেজন্যই তিনি আপোসহীন নেত্রী।
বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী উল্লেখ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপি অতীতে যেমন মানুষের পাশে ছিল, এখনো আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।’ বিএনপি চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এছাড়াও, বিএনপি সরকারের আমলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, নারী শিক্ষার উন্নয়ন, কর্মসংস্থানের জন্য কলকারখানা স্থাপনসহ তরুণ ও বেকারদের কর্মসংস্থানে নানা ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল।
তারেক রহমান অভিযোগের স্বরে বলেন, ‘বিএনপিকে হেয় করতে বিভিন্ন মহল দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমরা রাজনৈতিকভাবে তাদের মোকাবিলা করছি এবং করবো। তবে, জনগণের আস্থা বজায় রাখা আমাদের দায়িত্ব। এ জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে হবে। হতে হবে প্রচণ্ড আত্মবিশ্বাসী। তাহলেই আমরা পরিবর্তন আনতে পারবো।’