তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোঃ নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আমাদের কাজ করতে হবে। সেজন্য যেসব আইন ও বিধি নিয়ে সমালোচনা রয়েছে সেগুলো পুনর্বিবেচনা করতে হবে। বাংলাদেশে গণমাধ্যম ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা তথ্য মন্ত্রণালয়ের উপর অনেকাংশে নির্ভর করে। ফ্রিডম অফ প্রেস যদি না থাকে ফ্রিডম অফ স্পিচ নিশ্চিত হয় না।
নবনিযুক্ত তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা আজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার প্রধানগণ এবং গণমাধ্যম কর্মীদের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
মতবিনিময়ের শুরুতেই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত ছাত্র, জনতা এবং সাংবাদিকদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। উপদেষ্টা বলেন, আমরা আরও একটি রক্তাক্ত পরিবেশের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম নতুন করে স্বপ্ন দেখছে, নতুন করে আসা-আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে। আমরা সেই আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে এ সরকারে এসেছি। নাহিদ ইসলাম বলেন দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির কোন স্থান মন্ত্রণালয়ে থাকবে না।
দপ্তর প্রধানদের উদ্দেশ্যে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশকে পুনর্গঠন এবং নতুন বাংলাদেশ তৈরি করার যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হচ্ছে সেখানে যেন এ ধরনের স্বৈরতন্ত্র আর কোনদিন মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেদিকে আপনাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা জানি, বাংলাদেশের সাংবাদিকতা, গণমাধ্যম এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর কি ধরনের নির্লজ্জ হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। সামনের বাংলাদেশে এই ধরনের ঘটনা ঘটুক তা আমরা চাই না। তিনি আরো বলেন, আমি জনগণের পক্ষ থেকে এসেছি, জনগণের দাবি দাওয়া নিয়ে এসেছি, এক নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে এসেছি। আমি আপনাদের কাছে সহযোগিতা চাই।
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র জনতার পাশাপাশি অনেক সাংবাদিক আহত এবং শহীদ হয়েছেন তাদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো উচিত। আপনারা দেখেছেন আন্দোলনের মাঝে কিভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল, দেশ ব্ল্যাকআউটে চলে গিয়েছিল, কিছুই জানা যাচ্ছিল না। সে সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়া সম্পূর্ণ সরকারের হস্তক্ষেপে চলছিল। সেই সময় আমাদের কোন বক্তব্য প্রচার করা হতো না এবং যে কথাগুলো আমরা বলিনি সে কথাগুলো মিসকোড করে প্রচার করা হতো। তারপরও আমরা দেখেছি কিছু প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়া আমাদেরকে সমর্থন দিয়েছে। আন্দোলনে পুরো সময় যারা ফিল্ডে কাজ করেছেন সেইসব রিপোর্টাররা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন এবং আমাদেরকে সহযোগিতা করেছেন। যারা সহযোগিতা করতে পারেননি তারা হয়তো হাউজের কারণে বা তাদের মালিকের কারণে এ কাজটা করতে বাধ্য হয়েছেন। আমরা চাই না এই অবস্থা পুনরায় বাংলাদেশ আর ফিরে আসুক। আমরা চাই গণমাধ্যম যেন তার স্বাধীনতা নিয়ে জনগণের পাশে থেকে কাজ করতে পারে।
সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো নিয়ে অনেক অসন্তোষ রয়েছে। আমরা যদি মেধাবীদের উৎসাহিত করতে না পারি তাহলে সাংবাদিকতা এগোবে না। মিডিয়াতে যারা রিপোর্টার এবং জুনিয়র লেভেলে কাজ করেন তাদের বেতন অত্যন্ত কম, অনেক ক্ষেত্রে বেতন কাঠামো মানাও হয় না।