ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবঃ) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন জানান, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে নৌপথে ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঈদের আগের তিন দিন ও পরের সাত দিন সব ধরনের বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে। এছাড়া, ঈদযাত্রায় নৌপথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং ধারণক্ষমতার বাইরে অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কোনো অভিযোগ পেলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উপদেষ্টা আজ সচিবালয়ে ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ নৌ চলাচল এবং যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যথাযথ কর্মপন্থা গ্রহণ বিষয়ক সভা শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, প্রত্যেক লঞ্চঘাটের নিদিষ্ট স্থানে সরকার নির্ধারিত ভাড়ার রেট চার্ট প্রদর্শন করতে হবে। অন্যথায় মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রায়ই অভিযোগ শোনা যায়, ঈদের সময় যাত্রী সাধারণকে জিম্মি করে নির্ধারিত ভাড়ার বাইরে প্রায় দেড় বা দুই গুণ বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। এ ধরনের অপকর্মকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদরঘাট বা অন্যান্য ঘাটের ইজারা গ্রহণকারীরা যাত্রীদেরকে কোনোরূপ হয়রানি করতে পারবেন না। ঈদকে সামনে রেখে ঈদুল আজহার আগে তিন দিন এবং পরে তিন দিন নিত্য প্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ব্যতীত অন্যান্য ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ রাখা হবে। এছাড়া, নৌপথে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং উদ্ধার কার্যক্রম গ্রহণের জন্য উদ্ধারকারী জলযান প্রস্তুত থাকবে। উপদেষ্টা বলেন, যাত্রী সাধারণের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে সকল নদীবন্দর, টার্মিনাল ও ঘাটে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন থাকবে। জেলা প্রশাসকগণ টাস্কফোর্স গঠন করে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন।
উপদেষ্টা বলেন, দূরপাল্লাগামী লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে চারজন করে আনসার সদস্য নিয়োগের জন্য মালিকপক্ষকে বলা হয়েছে। এর ব্যত্যয় হলে, কোনো দুর্ঘটনা সংগঠিত হলে মালিকপক্ষ দায়ী থাকবে। লঞ্চে বা ফেরিঘাটে কর্মরত স্টাফদের নির্ধারিত ইউনিফর্ম এবং আইডি কার্ড থাকতে হবে। নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী, মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া, বরিশালের মেঘনা নদীসহ অপরাধপ্রবণ অঞ্চলগুলোতে কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশের পাশাপাশি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিশেষ টহল থাকবে।৩০ মে হতে ১৪ জুন পর্যন্ত ঢাকার জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক উন্মুক্ত রাখতে হবে। কোনো ভাবেই রাস্তার উপরে যত্রতত্র বাস দাঁড় করিয়ে রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট পুলিশ বাহিনী বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করবে। প্রয়োজনে রেকার দিয়ে অভিযুক্ত বাসগুলোকে সরিয়ে দিতে হবে। ঈদযাত্রার প্রস্তুতি দেখতে উপদেষ্টা সদরঘাটসহ নৌরুটের বিভিন্ন স্পটে আকস্মিক পরিদর্শনে যাবেন। তিনি আরো বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আগামীকাল থেকে প্রয়োজনীয় ড্রেজিং শেষে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হচ্ছে।