ইসলামাবাদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন

যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও আনন্দ-উৎসাহের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫১তম বর্ষপূর্তি উদ্যাপিত হয়েছে। এ বছর মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস তিন পর্বে উদ্যাপন করা হয়েছে। প্রথম পর্ব ২৬ মার্চ, দ্বিতীয় পর্ব ২৮ মার্চ ইসলামাবাদে হোটেল মেরিয়টে সংবর্ধনা ও তৃতীয় পর্বে ৩১ র্মার্চ লাহোরে হোটেল পার্ল কন্টিনেন্টালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম পর্বে, ২৬ মার্চ দূতালয় প্রাঙ্গণে হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন হাইকমিশনার মোঃ রুহুল আলম সিদ্দিকী। এ সময় সমবেতকণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। হাইকমিশনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রকৃতৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়। বাণী পাঠ শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা শেষে জাতির পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্মোৎসর্গকারী শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দেশ এবং জাতির সমৃদ্ধি, অগ্রগতি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। উদ্যাপনের দ্বিতীয় পর্বে পাকিস্তানে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ রুহুল আলম সিদ্দিকী ও তাঁর সহধর্মিণী শামসাদ আরা খানম ২৮ মার্চ স্থানীয় অভিজাত হোটেল মেরিয়টে এক সংবর্ধনার আয়োজন করেন। সংবর্ধনায় প্রায় তিন শতাধিক অতিথির মধ্যে পাকিস্তান জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা ও গবেষণা মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সৈয়দ ফখর ইমামসহ সিনেটর, জাতীয় সংসদের সদস্য, প্রাদেশিক পরিষদের স্পিকার, প্রাদেশিক এসেম্বলির সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া পাকিস্তান সরকারের বেসামরিক ও সামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, প্রবাসী বাংলাদেশি, ছাত্র, এবং প্রশিক্ষণরত সামরিক কর্মকর্তা এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের তৃতীয় পর্বে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে পার্ল কন্টিনেন্টাল হোটেলে আরো একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রায় দুইশতাধিক অতিথির মধ্যে প্রদেশিক সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ, বেসামরিক ও সামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত/হাইকমিশনার, অনারির কনস্যুলেট জেনারেল, ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, প্রবাসী বাংলাদেশি এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার মোঃ রুহুল আলম সিদ্দিকী তাঁর স্বাগত বক্তব্যে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের অবদানের কথা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী ও বিধ্বংসী যুদ্ধের পর বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৭২ সালে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ মার্কিন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল প্রায় শূন্য। দারিদ্র্যের হার ছিল ৮২%, গড় আয়ু ৪৭.১৪। যুদ্ধের কারণে সরকারি সম্পদ, কৃষি, বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ব্যাপক। সে হিসেবে বাংলাদেশের যাত্রা শুরু হয় ঋণাত্বক অবস্থান থেকে।

0Shares

নিউজ খুজুন